মাজার রোড, মিরপুর
মাজার রোড, মিরপুর
মিরপুরের মাজার রোডে অবস্থিত মূলধারার একটি বিদ্যালয় হল “হযরত শাহ আলী (র) মডেল হাই স্কুল”। ২০১৬ সালের শেষ দিকে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের প্রবল আগ্রহ এবং ইচ্ছায় বিদ্যালয়টিতে খান একাডেমি বাংলার স্কুল ইমপ্লিমেন্টেশনের কাজ করা হয়।
শুরুতেই খান একাডেমি বাংলা দলের সদস্যরা বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক এবং গণিত শিক্ষকদের সাথে খান একাডেমি বাংলার স্কুল ইমপ্লিমেন্টেশনের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন। বছরের শেষ দিকে এবং বার্ষিক পরীক্ষার ঠিক পূর্বে খান একাডেমির পাইলটিং এর কাজটি হয়। বিদ্যালয়টির ষষ্ঠ শ্রেণির দু’টি শাখার শিক্ষকদের মতামত এবং খান একাডেমি বাংলার বিষয়বস্তু পর্যালোচনা করে ৬টি পাঠের বিষয়বস্তু নির্বাচন করা হয়। বিষয়বস্তু নির্বাচনের পর শিক্ষকদের জন্য একটি শিক্ষক প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষার্থীদের দু’টি দলের জন্য দু’টি অরিয়েন্টেশন সেশনের আয়োজন করা হয়।
ল্যাব মডেলে ষষ্ঠ শ্রেণির দু’টি শাখার বাছাইকৃত শিক্ষার্থীদের নিয়ে খান একাডেমি বাংলার ইমপ্লিমেন্টেশনের কাজ শুরু করা হয়। শুরুতে শিক্ষকদ্বয়ের পাঠ পরিচালনায় সমস্যা হলেও, খান একাডেমি বাংলার ইমপ্লিমেন্টেশন দলের সদস্যদের ক্রমাগত গঠনমূলক সমালোচনার ফলে তারা দ্রুত সে সমস্যা কাটিয়ে উঠেন।
পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়নের ফলাফল
ইমপ্লিমেন্টেশনের প্রতিটি দিন সেখানে উপস্থিত থেকে খান একাডেমি বাংলা দলের সদস্যরা শ্রেণি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন। শ্রেণি কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনার জন্য খান একাডেমি বাংলা দলের পক্ষ থেকে শিক্ষকদের প্রতিটি পাঠের জন্য নমুনা পাঠ পরিকল্পনা সরবরাহ করা হয় এবং প্রতিটি পাঠের পর শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের জন্য ওয়ার্কসিট প্রদান করা হয়। শ্রেণি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ, ওয়ার্কসিট এবং বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল মূল্যায়ন করে বলা যায় যে-
১। শুরুতে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা এবং শ্রেণি ব্যবস্থাপনায় শিক্ষকদের সমস্যা হলেও তারা দ্রুত সে সমস্যা কাটিয়ে উঠে সফল ভাবে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
২। শুরুতে শিক্ষার্থীদের (বিশেষ করে বালক শাখার) পাঠে মনোযোগ কম এবং কম্পিউটারে অন্যান্য ওয়েবসাইট ও গেইমস ব্যবহারে মনোযোগ বেশি থাকলেও অভিনব এ পদ্ধতির শিক্ষন-শিখনে শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে আগ্রহী হয়ে ওঠে।
৩। পাঠে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ ও উৎসাহ এবং মনোযোগ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়, যার ফলে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির হার হ্রাস পায়।
৪। খান একাডেমি বাংলা ব্যবহার করে পাঠদানের ক্ষেত্রে শিক্ষক যেহেতু সহায়কের ভূমিকা পালন করে তাই শিক্ষক-শিক্ষার্থী আন্ত-সম্পর্ক বৃদ্ধি পায় এবং তাদের মাঝে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
৫। ওয়ার্কসিটগুলো মূল্যায়ন করে দেখা যায় যে শিক্ষার্থীরা ক্রমশ ভাল ফলাফল করছে এবং আগের দিনের চেয়ে বেশি নম্বর পাচ্ছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের পরস্পরের অর্জনের মাঝের দূরত্ব (achievement gap) কমতে দেখা যায়।
৬। খান একাডেমি বাংলা ব্যবহার করে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা বেশি উপকৃত হয়েছে এবং দ্রুত ভাল ফলাফল করতে পেরেছে।
৭। বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল মূল্যায়ন করে দেখা যায় যে খান একাডেমি বাংলা ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীরা যারা খান একাডেমি বাংলা ব্যবহার করেনি এমন শিক্ষার্থীদের থেকে স্কুল ইমপ্লিমেন্টেশনের পাঠের বিষয়বস্তুগুলোতে তুলনামূলক ভাল ফলাফল করেছে এবং এই দুটি দলের শিক্ষার্থীদের অর্জনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
২০১৭ সাল থেকে বিদ্যালয়টির ষষ্ঠ শ্রেণি সহ অন্যান্য শ্রেণিতেও খান একাডেমি বাংলার কার্যক্রম পুরোপুরিভাবে চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সেই লক্ষ্যে খান একাডেমি বাংলা দল বর্তমানে শিক্ষক প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থী অরিয়েন্টেশন সহ স্কুল ইমপ্লিমেন্টেশনের পেছনের কাজগুলো করছে।
শ্রেণী: ৬ষ্ঠ
শাখা: প্রভাতী
শিক্ষার্থীর সংখ্যা: ২১
মডেল: ল্যাব মডেল
পাঠ সংখ্যা: ৬
সময়কাল: অক্টোবর – নভেম্বর
গণিত শিক্ষক: জিতেশ নাথ চক্রবর্তী
শ্রেণী: ৬ষ্ঠ
শাখা: দিবা
শিক্ষার্থীর সংখ্যা: ২১
মডেল: ল্যাব মডেল
পাঠ সংখ্যা: ৬
সময়কাল: অক্টোবর – নভেম্বর
গণিত শিক্ষক: সুকান্ত কুমার ঘোষ
আগামী এবং খান একাডেমি দুটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন দাতা সংস্থার আর্থিক সহায়তায় খান একাডেমি বাংলা প্রকল্পটির কাজ চলছে। আপনিও এই প্রকল্পের সাথে সহযোগী হিসেবে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
যোগাযোগ করুন – khanacademybangla@agami.org অথবা education@agami.org